ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নেবে বিএনপি

প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৫, ১৭:০৭ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।

তিনি বলনে, দুর্নীতি, দুঃশাসন আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশের প্রশাসনের লাল ফিতার দৌরাত্ম্য দেখে আসছি কম-বেশি। সমাজের কিছু ব্যক্তি অথবা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়েছে বিধায় দুর্নীতি বেড়েছে। কিন্তু গত ১৭ বছরে দুর্নীতি ছিল আকাশচুম্বী। হাজার-হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এটা যদি আমরা সবাই মিলে রোধ করতে না পারি তাহলে আজকে বাংলাদেশ যে খাদের কিনারায় চলে গেছে... এখান থেকে উদ্ধার হতে হলে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে  তিনি এসব কথা বলেন।

এ্যানী বলেন, আমরা বিএনপির ৩১ দফায় উল্লেখ করেছি- দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্নীতি দূর করতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা এখন থেকেই কাজ শুরু করেছি। এটা বিএনপির জন্য একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।

শুধু প্রশাসনে নয়, তার বাইরে যাতে কেউ দুর্নীতি করতে না পারে এবং তা নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ কঠিন ভূমিকা নেবে বিএনপি।

আগামী নির্বাচনে কারা বিএনপির মনোনয়নের জন্য উপযুক্ত হবেন, এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শহীদউদ্দিন এ্যানী বলেন, আমাদের দলের স্থায়ী কমিটি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং চেয়ারপারসনের পরামর্শ নিয়ে দল পরিচালিত হচ্ছে। তাদের কাছে অনুরোধ করেছি- সারা দেশে নিজস্ব জরিপের মধ্য দিয়ে যিনি সবচেয়ে জনপ্রিয়, এলাকায় নির্বাচন করার জন্য উপযোগী হবেন, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা আছে, ত্যাগী...তাকে দল বাছাই করে নেবে।

আগে দুর্নীতি যা ছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা হাজারগুণ বেশি হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন এ্যানী। তিনি আরও বলেন, তিনি ( শেখ হাসিনা) তার বাবার চাইতে কয়েক শতগুণ বেশি ফ্যাসিবাদী এবং কর্তৃত্ববাদী শাসন চালিয়েছেন। এরশাদের চাইতে কয়েকশত ডিগ্রি বেশি ফ্যাসিবাদ ছিলেন তিনি। আমরা এরশাদকে স্বৈরচার বলি, আর হাসিনাকে ফ্যাসিবাদী বলি।

তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাজনীতি দেখেন, তিনি উন্নয়ন এবং নিজস্ব কর্মসূচি দিয়ে রাজনীতি করেছেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন, তখন তার বয়স কত ছিল আর যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন বয়স কত ছিল। ৭১ থেকে ৮১, এই ১০ বছরের মধ্যে মাত্র সাড়ে তিন বছর ক্ষমতা ছিলেন।...জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতির মধ্যে কোনো ফ্যাসিবাদী এবং কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি ছিল কি না দেখেন? বিএনপি কখন ফ্যাসিবাদের ভূমিকায় ছিল না।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতা থাকাকালে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে দাবি করেন শহীদউদ্দিন এ্যানী। তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশের ষড়যন্ত্র ছিল। পার্শ্ববর্তী দেশ খালেদা জিয়াকে টার্গেট করেছিল। তারা তারেক রহমানের রাজনীতিকে টার্গেট করেছিল। তার নামে নানান অপপ্রচার করেছে, হাওয়া ভবন দিয়ে তার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চেয়েছিল। যাতে তারেক রহমান তার নিজস্ব চিন্তা-চেতনা দেখাতে না পারে।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে কী ধরনের উদ্যোগ নেবে, জানতে চাইলে এ্যানী বলেন, বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে, প্রভু থাকবে না। জিয়াউর রহমান সার্ক গঠন করেছিলেন। আমাদের পার্শ্ববর্তী ৭টি দেশ মিলে এটা একটা অ্যাসোসিয়েশন। যেকোনো সমস্যার আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সুন্দর সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সার্ককে পুরোপুরি অকার্যকর করে দিয়েছে। তারা একটা দেশকে প্রাধান্য দিয়েছে। আশা করছি, ভবিষ্যতে সার্ক পুরোপুরি কার্যকরভাবে সক্রিয় হবে। সেজন্য আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের যে পররাষ্ট্রনীতি, সেখানে চায়নার জন্য একটা পররাষ্ট্রনীতি থাকবে, আমেরিকার জন্য একটা, যুক্তরাজ্যের জন্য আরেকটা এবং পার্শ্ববর্তী দেশের জন্য আলাদা পররাষ্ট্রনীতি থাকবে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, তারেক রহমান খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন। তার ফেরার জন্য লন্ডন ও বাংলাদেশে প্রস্তুতিও চলছে। তাকে বরণ করে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আঁকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, সহ সভাপতি গাজী আনোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, কার্যনির্বাহী  সদস্য মো. জুনায়েদ হোসাইন (জুনায়েদ শিশির)।


আমার বার্তা/এমই