জামায়াতের সঙ্গে জোট নিয়ে এনসিপির নারী নেত্রীদের আপত্তি!
প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:০৪ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জোট গঠনের তৎপরতাও বাড়ছে। ইতোমধ্যে বিএনপি তাদের শরিকদের সঙ্গে নির্বাচনী আসন সমঝোতা করেছে। অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াতে ইসলামী-র মধ্যে নির্বাচনী জোট গঠনের আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকলেও এখনও ঘোষণা আসেনি। তবে এই জোট গঠনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন এনসিপির নারী নেত্রীরা। এনসিপি ইতোমধ্যে শাপলা কলি প্রতীক নিয়ে শতাধিক আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা আবদুল কাদের দাবি করেছেন, এনসিপি ও জামায়াতের মধ্যে জোট চূড়ান্তের পথে। তিনি একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, এনসিপি জামায়াতের সঙ্গে সরাসরি জোট বাঁধতে যাচ্ছে। সব ঠিক থাকলে শীঘ্র এই জোটের ঘোষণা আসতে পারে। তার দাবি, প্রাথমিকভাবে এনসিপি ৫০টি আসন চাইলেও দরকষাকষিতে ৩০টি আসনে রফা হয়েছে। এই শর্তে এনসিপি বাকি ২৭০ আসনে প্রার্থী দিতে পারবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে, ৮ দলীয় ইসলামী জোট সূত্রে জানা যায়, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত মজলিসের সঙ্গে এনসিপির আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হওয়ার পথে। মনোনয়নপত্র উত্তোলনের শেষ দিনের আগে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও আসনভিত্তিক সমঝোতা হবে বলে জোট নেতারা জানান।
তবে এই জোট গঠনের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন এনসিপির নারী নেত্রীরা। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বাসায় বৈঠকে নারী নেত্রীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, জামায়াতের সঙ্গে জোট হলে তারা সম্মিলিতভাবে দলত্যাগ করবেন। এই হুমকির কারণে দলীয় নেতৃত্ব চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। এনসিপির অভ্যন্তরে জামায়াত-সমঝোতা নিয়ে তীব্র মতপার্থক্য রয়েছ। এমনকি জামায়াত-বিরোধী অংশের নেতা মীর আরশাদুল হক ইতোমধ্যে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির জোট নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন এনসিপির জুনিয়র নেত্রী মুনিরা শারমিন। তিনি ফেসবুকে লিখেন, মাইনাসের গেইম খেলো না বন্ধু, আমলনামা সুরক্ষিত আছে। সততার শক্তিকে চ্যালেঞ্জ কইরো না।
এনসিপির আরেকটি অংশ জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতার পক্ষে। জামায়াতের পক্ষ থেকে ৩০ থেকে ৩৫টি আসন ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে বলেও জানা গেছে। পাশাপাশি, এসব আসনে জনবল ও আর্থিক সহযোগিতা-রও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
হাসিনা বিরোধী আন্দোলনের অন্যান্য শীর্ষ নেতা, যেমন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া ও মাহফুজ আলম-ও এনসিপিকে জামায়াতের সঙ্গে জোট না করতে পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, ‘জুলাই আন্দোলনের মূল শক্তি’ হিসেবে এনসিপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে।
এমন প্রেক্ষাপটে, নারী নেত্রীদের দৃঢ় অবস্থান এবং দলের অভ্যন্তরীণ বিভাজন এনসিপি-জামায়াত জোটের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজনৈতিক মেরুকরণ কোন দিকে মোড় নেয়, সেটি এখন সময়ই বলবে!
আমার বার্তা/এমই
