মেসিকে দেখতে না পেয়ে কলকাতায় গ্যালারিতে ভাঙচুর
প্রকাশ : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪:২১ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

লিওনেল মেসি জ্বরে কাঁপছে ভারত। শুক্রবার মধ্যরাতে পা রাখেন আর্জেন্টিনা ফরোয়ার্ড। কলকাতার হায়াট রিজেন্সিতে ছিলেন তিনি। সকালে ১১টায় শুরু হয় তাকে ঘিরে নানা আয়োজন।
কিন্তু ঘণ্টাখানেক যেতেই এই উন্মাদনা রূপ নিলো ক্ষোভে। আয়োজনের দ্বিতীয় ভাগে যুব ভারতী স্টেডিয়াম রণক্ষেত্রে রূপ নেয়।
মোহনবাগান অল স্টার্স ও ডায়ামন্ড হার্বার্স অল স্টার্সের প্রদর্শনী ম্যাচের আগ দিয়ে যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে পৌঁছান মেসি। তার সঙ্গে ছিলেন দীর্ঘদিনের সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি পল। সকালে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। তারপর ভার্চুয়ালি নিজের ৭০ ফুট উচ্চতার ভাস্কর্য উন্মোচন করেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। তখনো সাধারণ ভক্তদের তাকে সেভাবে দেখার সুযোগ হয়নি। এরপর বেলা ১২টার দিকে মেসি পৌঁছান যুব ভারতীতে। কিছুক্ষণ পর শুরু হয় হট্টগোল।
মেসিকে ভালোভাবে দেখার জন্য যুব ভারতী স্টেডিয়ামে অপেক্ষায় ছিলেন হাজারো ভক্ত-সমর্থক। সফরের প্রথম দিন ঠিক সকাল সাড়ে ১১টায় যুব ভারতীর মাঠে ঢোকে মেসির গাড়ি। ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনা দেখে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন তিনি। তবে গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু মানুষ ঘিরে ধরেন তাকে। ফলে গ্যালারি থেকে প্রায় ২০ মিনিট মেসিকে দেখাই যায়নি। এক সময় ক্ষুব্ধ ফুটবলপ্রেমীরা ‘উই ওয়ান্ট মেসি’ স্লোগান দিতে শুরু করেন।
মেসি যুবভারতীতে পৌঁছোতেই অন্তত ৭০-৮০ জন মানুষের ভিড় ঘিরে ধরে তাকে। মূলত মন্ত্রী, কর্তারাই ঘিরে ধরেন মেসিকে। তাকে ভালো করে হাঁটার জায়গাটুকুও দিচ্ছিলেন না কেউ কেউ! ক্যামেরা এবং মোবাইল হাতে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। মেসিকে ঘিরে রাখেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। গ্যালারি থেকে তাকে দেখা যাচ্ছিল না।
চড়া দামে টিকিট কেটে মেসিকে দেখতে যাওয়া ফুটবলপ্রেমীদের ভরসা ছিল স্টেডিয়ামের তিনটি জায়ান্ট স্ক্রিন। মোহনবাগান এবং ডায়মন্ড হারবারের প্রাক্তন ফুটবলারদের সঙ্গে মেসি পরিচিত হওয়ার সময়ও ভিড় ঘিরে ছিল তাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং প্রধান আয়োজক শতদ্রু দত্তকে মাইক্রোফোনে ঘোষণা করতে হয়। তাতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। কারণ গ্যালারি থেকে একবারও দেখা যায়নি মেসিকে।
১১.৫২ মিনিটে আচমকা মেসিকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। ১০ মিনিটও থাকেননি তিনি। সময়ের আগেই তার মাঠছাড়ার কারণে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মোটা টাকায় টিকিট কিনে মাঠে এসেও মেসিকে দেখতে না পাওয়ায় ফুটবলপ্রেমীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। শুরু হয় গ্যালারিতে লাগানো হোর্ডিং ভাঙচুর। পরে গ্যালারির চেয়ার ভেঙে মাঠে ছুড়তে শুরু করেন ক্ষুব্ধ ফুটবলপ্রেমীরা। মাঠে পড়তে শুরু করে বোতল।
একসময় মাঠের ধারে ফেন্সিংয়ের গেট ভেঙে হুড়মুর করে মাঠে ভক্ত-সমর্থকরা ঢুকতে শুরু করেন। প্রথমে পুলিশ ছিল দিশেহারা। কিছুক্ষণ পর লাঠি উঁচিয়ে ক্ষুব্ধ জনতাকে তাড়া করে গ্যালারিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই ফুটবলপ্রেমীরা আবার মাঠে ফিরে আসেন।
এমন আয়োজনকে ভক্তরা ‘চরম অপমান’ ও ‘পুরোপুরি অব্যবস্থাপনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। শুরুতেই আয়োজন নিয়ে বিতর্ক, বাকি দুই দিনে মেসির আগমন ঘিরে উত্তেজনা কোন দিকে গড়ায়, সেটাই দেখার অপেক্ষা। ১৫ ডিসেম্বর নয়াদিল্লি সফর শেষে সন্ধ্যায় ভারত ছাড়বেন মেসি।
আমার বার্তা/এল/এমই
