চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে (এইউডব্লিউ) ইসরাইল ও তার মিত্রদেশের অর্থায়নে পরিচালিত হয় এমন অভিযোগ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেছেন, কোনো ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ওখানে পড়বে না।
তার দাবি ইসরাইলের মিত্রদের থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের বড় অংশ আসে। তাই ফিলিস্তিন সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, এইউডব্লিউতে ফিলিস্তিনি নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। অতীতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন আফগান এবং একজন লাও শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যার কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
এই উদ্বেগগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চ্যান্সেলর চেরি ব্লেয়ার এবং ট্রাস্টি বোর্ডের কিছু সদস্যের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্কের কারণে আরও বেড়েছে।
চেরি ব্লেয়ারের স্বামী, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজার ‘রিভেরা’ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যার লক্ষ্য গাজা উপত্যকাকে জাতিগতভাবে নির্মূল করা।
সংবাদ সম্মেলনে রাষ্ট্রদূত জানান, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্ষমতা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে। এইউডব্লিউতে শিক্ষার্থী পাঠানোর জন্য কিছু শক্তিধর দেশ ফিলিস্তিনের ওপর চাপ দিয়েছিল। কিন্তু দূতাবাস এমন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অনুমোদন দিতে পারে না, যার তহবিল উৎস ফিলিস্তিনের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই উদ্বেগগুলো ইসরাইলি সরকার এবং ফিলিস্তিনের প্রতি তার নীতিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমর্থনকারী প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের সঙ্গে এইউডব্লিউ’র সম্পৃক্ততার কারণে আরও বেড়ে যায়।
বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ফিলিস্তিনিদের ধারাবাহিকভাবে উদার সহায়তা দিয়ে আসছে। ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীরা এইউডব্লিউতে নয়, বরং বাংলাদেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আগ্রহী। দূতাবাস বাংলাদেশে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের পড়তে আসাকে স্বাগত জানায়।
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের মেয়েরা বিক্রির জন্য নয়। তারা আমাদের সম্মান এবং আমরা আমাদের সম্মান রক্ষা করব।
সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেড় বছর আগে গাজা উপত্যকার ২০০ ছাত্রীকে বৃত্তি দিয়েছিল এইউডব্লিউ। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয়টির তালিকায় থাকা ছাত্রীদের মধ্যে ১৮৯ জনকে গত বছরের অক্টোবরে অন অ্যারাইভাল ভিসার অনুমতি দেয়। পরে তা বাতিল করা হয়। এই ভুল বোঝাবুঝির পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূত এইউডব্লিউতে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী না পাঠানোর সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দেন।
আমার বার্তা/জেএইচ