
মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মানুষের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় এখনো লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোরে চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বিজয় দিবসে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে উত্তর কাট্টলীতে সাগরতীরের টোল রোডসংলগ্ন অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই চট্টগ্রাম থেকেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সূচনা হয় এবং লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে আজকের এই দিনে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি।
মেয়র বলেন, বিজয়ের এই দিনে আমরা স্মরণ করছি সেই লাখো শহীদদের, যাদের জীবনের বিনিময়ে এবং মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। তাদের আত্মত্যাগের ফলেই আমরা পেয়েছি একটি লাল-সবুজের পতাকা এবং ৫৫ হাজার ১২৬ বর্গমাইল আয়তনের একটি স্বাধীন বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় আমাদের এখনো কাজ করে যেতে হচ্ছে। স্বাধীনতাকে ধরে রাখতে হলে বিভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে মেয়রের পাশাপাশি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার জিয়াউদ্দীন এবং জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। এরপর চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হুমায়ন কবির এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁনসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রধান ও কর্মকর্তারা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এদিকে সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। সেখানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি আউটার স্টেডিয়াম ও লালদীঘি পাড়াসহ নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে শিশুদের জন্য শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিনা টিকিটে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র ও প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্রে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়।
আমার বার্তা/এল/এমই

