
সরকারের কোনো না কোনো অংশ প্রথম আলো, দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয় ও ছায়ানট ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর।
শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
নূরুল কবীর বলেন, ১৮ ডিসেম্বর রাতে দেশের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সংগঠিত সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়। ওই রাতে প্রথম আলোর কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হয়, যার ফলে কার্যালয়টি কার্যত ভস্মীভূত হয়ে যায়। একই রাতে দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়েও হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
তিনি আরো বলেন, ডেইলি স্টার কার্যালয়ে সংহতি জানাতে গেলে তাকেও হেনস্তার শিকার হতে হয়। এই ঘটনাকে তিনি গণমাধ্যমের জন্য একটি ‘কালো দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেন। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, এসব হামলা স্বাধীন ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের ওপর সরাসরি আঘাত।
বিজেসির ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনেও আলোচনায় বারবার এসব হামলা ও ভাঙচুরের প্রসঙ্গ উঠে আসে। বক্তব্যে নূরুল কবীর বলেন, “পরিষ্কারভাবে আমরা জানি প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানট ধ্বংস করে দেওয়ার ঘোষণা একদিন বা দুই দিন আগেই দেওয়া হয়েছিল। কারা এই ঘোষণা দিয়েছে, দেশের মানুষ জানে, সরকারও জানে। এগুলো বাংলাদেশের আইনে স্পষ্ট ফৌজদারি অপরাধ।”
তিনি বলেন, এসব ঘোষণা সত্ত্বেও সরকার আগেভাগে কাউকে গ্রেপ্তার করেনি বা ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। তার ভাষায়, “তারা তো আগেই বলেছিল এগুলো ধ্বংস করা হবে। সেই কারণেই আমরা বলছি সরকারের কোনো না কোনো অংশ এই ঘটনাগুলো ঘটতে দিয়েছে।”
নূরুল কবীর আরও বলেন, হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রাজনৈতিক পরিচয় স্পষ্টভাবে পাওয়া যাচ্ছে, যা পুরো ঘটনাকে একটি সংগঠিত শক্তির কাজ হিসেবে প্রমাণ করে।
সাংবাদিক শাহনাজ শারমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সাবেক গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান ও দ্য ডেইলি স্টারের কনসাল্টিং এডিটর কামাল আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বিজেসির উপদেষ্টা খায়রুল আনোয়ার, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিজেসির ট্রাস্টি ফাহিম আহমেদ, বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি মো. আল মামুন, সাংবাদিক তালাত মামুন, ইলিয়াস হোসেন ও মিল্টন আনোয়ার।
আমার বার্তা/এমই

