
বজ্রপাতজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় বিজ্ঞানভিত্তিক পূর্বাভাসকে কমিউনিটি-কেন্দ্রিক ও কার্যকর আগাম সতর্কতায় রূপ দেওয়ার ওপর জোর দিয়েছে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি)।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকায় 'ব্রিজিং সায়েন্স উইদ কমিউনিটিজ: ডেভেলপিং আ কমিউনিটি-বেজড লাইটনিং আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক এক জাতীয় শেয়ারিং অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানানো হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দেশে বজ্রপাতে প্রায় দুই হাজার মানুষের মৃত্যু এবং ১৩০০ এর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন গ্রামীণ কৃষক ও জেলে সম্প্রদায়, বিশেষ করে সুনামগঞ্জসহ হাওরাঞ্চলে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, প্রতিবছর বজ্রপাতে গড়ে প্রায় ৩০০ মানুষের মৃত্যু হলেও বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যথাযথ গুরুত্ব পায়নি। তিনি সময়মতো মাঠপর্যায়ে সতর্কবার্তা পৌঁছাতে আন্তঃসংস্থাগত সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিএমডির পরিচালক ও ডব্লিউএমওতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মো. মোমেনুল ইসলাম বলেন, বজ্রপাতের ঝুঁকি কমাতে কেবল বৈজ্ঞানিক তথ্য যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন সহজবোধ্য বার্তা, কমিউনিটির আস্থা ও শক্তিশালী যোগাযোগ ব্যবস্থা।
গবেষণায় উঠে আসে, জরিপকৃত পরিবারের অর্ধেকের বেশি বজ্রপাতজনিত হতাহতের সরাসরি অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তবে ৭৭ শতাংশ মানুষ সতর্কবার্তার লিড টাইম সম্পর্কে জানেন না এবং ৯৬ শতাংশ কখনো বজ্রপাত বিষয়ক মহড়ায় অংশ নেননি। ফলে নারী, যুবক, প্রতিবন্ধী ও স্বল্প-শিক্ষিত জনগোষ্ঠী বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিরা ও উন্নয়ন সহযোগীরা কমিউনিটি-নেতৃত্বাধীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বহুমাধ্যমভিত্তিক আগাম সতর্কতা ব্যবস্থায় ধারাবাহিক বিনিয়োগের ওপর গুরুত্ব দেন। প্যানেল আলোচনায় বলা হয়, সীমিত পূর্বাভাস সময়, দুর্বল যোগাযোগ ও আশ্রয়কেন্দ্রের অভাব বড় চ্যালেঞ্জ।
গবেষণাটি বজ্রপাত মোকাবিলায় একটি কমিউনিটি-ভিত্তিক আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করেছে, যেখানে বৈজ্ঞানিক পূর্বাভাস, স্থানীয় জ্ঞান ও বিশ্বস্ত যোগাযোগ মাধ্যমের সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রাণহানি কমানো সম্ভব হবে।
আমার বার্তা/এমই

