দাদন ব্যবসায়ীদের হাত থেকে রক্ষা পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষক-ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও প্রান্তিক গ্রাহকদের মাঝে স্বল্প সুদে (৭%) ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলার সকল তফসিলি ব্যাংকের সহযোগিতায় ও সিটি ব্যাংক পিএলসি ঠাকুরগাঁও শাখার আয়োজনে সদরের সালন্দর এলাকায় অবস্থিত ব্যুরো বাংলাদেশ হল রুমে এ ঋণ বিতরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠানের সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও সোনালী ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এ কে এম মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্টের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিটি ব্যাংকের মাইক্রোফাইন্যান্স, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ডিএমডি-হেড অফ স্মল কামরুল মেহেদী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন বিভাগের উপপরিচালক মো. শামীম আল মামুন।
আয়োজকরা জানান, জেলার ৫৬ জন প্রান্তিক গ্রাহকের মাঝে ৯৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার ঋণ প্রদান করা হয়। কৃষক, ভূমিহীন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা যাতে স্বল্প সুদে (৭%) ঋণ পায় সেই জন্যই আমাদের এ আয়োজন।
ঋণ গ্রহীতা সাদেকুল, আজাদ, কামাল ও তসলিমা বেগম জানান, স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা পেয়ে আমরা অত্যন্ত খুশি। এ টাকা সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে পরিশোধ করা যাবে। যেহেতু সাত শতাংশ সুদে ঋণ দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তা না হলে দাদন কিংবা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসাসহ বিভিন্ন কাজে লাগিয়ে পরিশোধে বেগ পেতে হতো। অনেকই লোকসানে পড়ে ব্যবসাও ছেড়ে দিতো। তাই এমন কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানান তারা।
এ সময় আমন্ত্রিত অতিথিরা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক দশ/পঞ্চাশ/একশ টাকার হিসাবধারী প্রান্তিক ভূমিহীন কৃষক, নিম্ন আয়ের পেশাজীবী, স্কুল ব্যাংকিং হিসাবধারী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য গঠিত ৭৫০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম চালু করা হয় এবং প্রান্তিক গ্রাহকদের মাঝে প্রকাশ্য ঋণ বিতরণ অনুষ্ঠান করার জন্য লিড ব্যাংক হিসেবে ঠাকুরগাঁও জেলার সিটি ব্যাংককে নির্বাচন করা হয়। তাদের আয়োজনেই মূলত আজ এ ঋণদান কর্মসূচি।
তারা আরও বলেন, মূলত দাদন ব্যবসায়ীদের হাত থেকে রক্ষা পেতেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যাতে করে কোন প্রান্তিক কৃষক কিংবা উদ্যোক্তারা দাদনের কবলে পড়ে জমি-ভিটা বিক্রি করে সর্বস্বান্ত না হন। সে কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে প্রান্তিক মানুষের সুবিধার্থে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাই দাদন ব্যবসায়ীদের খপ্পরে না পড়ে ব্যাংকমুখী হওয়ার আহ্বান তাদের।
আমার বার্তা/এল/এমই