ই-পেপার শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

সচেষ্ট থেকেছি যেন কোনো ভূ-রাজনৈতিক ফাঁদে না পড়ি

আমার বার্তা অনলাইন
০২ আগস্ট ২০২৫, ১০:১৫

আমেরিকায় শুল্ক আলোচনা প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, আমাদের তরফ থেকে চেয়েছি, আমরা যেন কোনো ভূ-রাজনৈতিক ফাঁদে পড়ে না যাই। সেই কারণে আমরা সব সময় সচেষ্ট থেকেছি, যাতে শুল্ক আলোচনার পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টা আমরা রক্ষা করতে পারি।

শুক্রবার (০১ আগস্ট) ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেছেন।

ভিডিওতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক বিষয়ক আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত-সমালোচিত বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, সংস্কৃত ভাষায় একটি কথা আছে, ফলেন পরিচয়ে। আপনি ফল দেখলেই বুঝবেন যে, কাজটা ঠিক হয়েছে কি না। আমরা তো ফল আনলাম এবং আমরা যেটা আনলাম, আমাদের প্রতিযোগীদের যে রেঞ্জ, সেই রেঞ্জে।

এর আগে ট্রাম্প-শুল্ক নিয়ে সমঝোতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সক্ষমতা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে—এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কারণ আমি নিজেও বুঝিনি। একটা কারণ হতে পারে এটা যে নিছক শুল্ক চুক্তি নয়, এটার সম্পর্কে সম্ভবত সম্যক ধারণা ছিল না। যদি কেবল এমন হতো আমাদের ডিউটিগুলো অ্যাডজাস্ট করে নিচ্ছি আমেরিকান প্রোডাক্টের জন্য, তাহলে এই কাজটা কিন্তু আমরা দেড়-দুবেলাতে করে ফেলতে পারতাম।

‘এখানে চারটি জিনিস প্রত্যেকটি দেশকেই করতে হয়েছে, শুধু আমাদের নয়। একটি হলো, ট্যারিফ রেটগুলো অ্যাডজাস্ট করতে হয়েছে আমেরিকান প্রোডাক্টের ওপর। দ্বিতীয় ও প্রধান বিষয়টি হচ্ছে, আমেরিকার যে বাণিজ্য ঘাটতি আছে অন্যান্য দেশের সঙ্গে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেটা কমাতে চাচ্ছেন। সুতরাং শুল্ক বাধা হচ্ছে একটা বাধা। অশুল্ক বাধা যেগুলো আছে এবং আমদানিকারক দেশের বিভিন্ন নীতিতে সেগুলো প্রতিফলিত হয়। তারা চাচ্ছেন সেই নীতিগুলো পরিমার্জন করা হোক, যাতে করে আমেরিকান এক্সপোর্টের ওপর বিধিনিষেধ কমে যায়,’ যোগ করেন তিনি।

ট্যারিফ ইস্যুর আলোচনায় নিরাপত্তা উপদেষ্টা কেন—জানতে চাইলে খলিলুর রহমান বলেন, তৃতীয় বিষয়, কিছু পারচেস কমিটমেন্ট আমাদের নগদ করতে হবে, যাতে করে তাৎক্ষণিকভাবে ট্রেড ডেফিসিট আমেরিকার জন্য কিছু কমে যায়। চতুর্থত, যে আইনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ দিয়েছেন—ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ইমারজেন্সি পাওয়ারস অ্যাক্ট। তাতে বলা আছে, যদি রাষ্ট্রপতি মনে করেন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক কিংবা জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে, এ ধরনের কারণে যদি তিনি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাধা, বিশেষ করে বিদেশি পণ্য আমেরিকার বাজারে প্রবেশের বিষয় উনি নিয়ন্ত্রণ করতে চান, উনি পারবেন। ওই আইনে ন্যাশনাল সিকিউরিটির কথা আছে। শুরু থেকে যারা বিষয়টি পর্যালোচনা করেছেন, তারা জানতেন।

জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণভাবে জড়িত থাকায় সব দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, সেই কারণে শুধু আমি নই, আমি যখন প্রথম ওয়াশিংটনে জুলাই মাসে আসি, কোরিয়ান ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার এখানে বসে ছিলেন। আমার মতোই। কারণ আমাদের তরফ থেকে চেয়েছি, আমরা যেন কোনো ভূ-রাজনৈতিক ফাঁদে পড়ে না যাই। সেই কারণে আমরা সব সময় সচেষ্ট থেকেছি, যাতে শুল্ক আলোচনার পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টা আমরা রক্ষা করতে পারি।

খলিলুর রহমান আরও জানান, তিনি জাতিসংঘের বাণিজ্য সংস্থা আঙ্কটাডে ২৫ বছর কাজ করেছেন। যেখানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আলোচনাই তার প্রধান কাজ ছিল।

লবিস্ট নিয়োগ করলেন না কেন জানতে চাইলে নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ইইউ, জাপান, কোরিয়া, মেক্সিকোর সঙ্গে আমেরিকার বহু বছরের সম্পর্ক; শুধু অর্থনৈতিক নয়, বাণিজ্যিক নয়, বিনিয়োগ নয়—সামরিকও। তারাই খুব সহজে অ্যাগ্রিমেন্ট করতে পারেনি। কানাডা আজকেও করতে পারেনি, ভারতও করতে পারেনি। তাদের লবিস্ট কম আছে নাকি? এই আলোচনা লবিস্ট দিয়ে হয় না। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, আমরা লবিস্টের পেছনে কতটুকু খরচ করতে পারবো! আলোচনা হওয়ার পরে এটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে যায় এবং তিনি সম্মত হলে ট্যারিফ রেট অন্যান্য দেশগুলো পায়। হোয়াইট হাউসে অ্যাকসেস থাকতে হবে। কোনো লবিস্ট ফার্ম আমরা শেষ মুহূর্তে এসে নিয়োগ করলে সেই অ্যাকসেস পাবে? পাওয়ার তো কোনো কারণ নেই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের লবিস্টের কোনো প্রয়োজন ছিল না, কারণ ভবিষ্যতে আমাদের যে আমেরিকান পণ্য ক্রয়, সেটা আমরা করতে চাচ্ছি এ দেশের কৃষি পণ্যে। গম, তুলা বা সয়াবিন হোক। কৃষির লবি ওয়াশিংটনে অত্যন্ত শক্তিশালী। আমরা তাদের সঙ্গে অনেকবার বসেছি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখুন, এখানে আমরা ক্রেডিট নিতে চাচ্ছি না। সে কারণে কিন্তু আমি এখানে আসিনি। এই সরকারও সাত-আট মাস আছি আমরা। আমরা চলে যাব, এখানে ক্রেডিট নেওয়ার কিছু নেই। আমাদের প্রতিযোগী যারা আছে, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম সবাই কিন্তু নেগোসিয়েট করেছে। নেগোসিয়েট না করলে আপনি কিন্তু রেট পেতেন না, আপনি ৩৫ শতাংশে আটকে থাকতেন। আজকে পর্যন্ত ভারত পায়নি। কানাডা নেগোসিয়েশন শেষ করতে পারেনি, তারা একটা বড় ট্যারিফের ধাক্কা খেয়েছে। আমরা অন্তত কাজটা এমন চূড়ান্ত পর্যায়ে আনতে পেরেছি, যাতে করে আমাদের রেটটা দেওয়া হলো। রেটটা মোটামুটি আমাদের প্রতিযোগীরা যা পেয়েছে, সেই রেঞ্জে।

দেশের মানুষকে অন্ধকারে রেখে, দেশ বিক্রি করে দিয়ে ২০ শতাংশ শুল্কের জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে—এই অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি খুব খুশি মানুষ এই প্রশ্নটা করছে। কারণ ১৫ বছর ধরে আমাদের দেশে আগের সরকার যে ধরনের চুক্তি করেছে, পাঁচ টাকার জিনিস ৫০ টাকায় কিনেছে। বিভিন্ন জায়গায় এখন আমরা দেখছি, আমাদের জাতীয় স্বার্থ কীভাবে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, শুধু আজকে নয়, সব সরকারের কাছে মানুষের স্বচ্ছতার দাবিটা একেবারে সামনে থাকা দরকার।

‘এই যে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা আমরা করলাম। সব দেশকে ননডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট সই করতে হয়েছে। যে বিষয়গুলো আমরা আলোচনা করেছি, সেগুলো স্বাক্ষর করার আগ পর্যন্ত গোপন রাখা কিন্তু প্রচলিত চর্চা। আমরা যদি আগামীতে গঙ্গা নদীর পানি চুক্তির আলোচনা শুরু করি, খসড়া চুক্তি কিন্তু জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয় না। সে ধরনের রীতি নেই, এটা ডিপ্লোম্যাটিক প্র্যাকটিস। অনেকে হয়তো জানেন না তাই বলেন। আমার তাতে কোনো আপত্তি নেই, বলতেই পারেন। এটা যখন স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত হবে। তখন আমরা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে স্বচ্ছতার কারণে জনসম্মুখে যাতে প্রকাশ করা যায় সেই অনুরোধ করব,’ যোগ করেন তিনি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমাদের কোনো পার্লামেন্ট নেই। এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। সুতরাং আগামী যে সরকার ভোটে আসবেন, তাদেরকে এই চুক্তিতে অবলিগেট করতে চাই না। সেই কারণে এই চুক্তির পরিমার্জন, পরিবর্তন, এমনকি এটাকে বাতিল করার একটি ক্লজ রাখার কথা বলেছি।’

খলিলুর রহমান বলেন, দ্বিতীয় কথা যেটি বলেছি, আমাদের বহন করার সক্ষমতার অধিক কোনো অবলিগেশন আমরা নেব না। তৃতীয় কোনো দেশের এখানে কোনো মেনশন থাকবে না। আমরা এটুকু বলতে পারি, আমরা দেশের স্বার্থ পুরোটাই রক্ষা করে করেছি। আগামী নির্বাচিত সরকার কয়েক মাসের মধ্যেই আসবে, তারা যদি মনে করেন আমাদের স্বার্থে হয়নি, তারা বাতিল করে দিতে পারে।

বাংলাদেশ ২৫টি বোয়িং কিনতে চাচ্ছে এবং সেটি দেশের অর্থনীতির ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি করবে। বোয়িং কিনে বাংলাদেশ শুল্ক কমালো—এই আলোচনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এক কোটির বেশি বাংলাদেশি প্রবাসে বসবাস করে। এটা আমাদের জন্য একটি বিশাল মার্কেট। আমরা এই মার্কেটটা পুরোপুরি ধরতে পারছি না। বিদেশি বিমানগুলো ব্যবসাগুলো নিয়ে যাচ্ছে। ফ্লাইট না বাড়ালে অধিক পরিমাণে যাত্রীর সার্ভিস আপনি দিতে পারবেন না। একটা বিমান বানাতে কিন্তু অনেক সময় লাগে। এটা আমরা ভবিষ্যতের কথা ভেবে করেছি। আগামী ১০-১৫ বছরে ২০-২৫টি প্লেন আমাদের লাগবে।

আমার বার্তা/জেএইচ

রোববার থেকে জিএমপির সব থানায় অনলাইন জিডি চালু হচ্ছে

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সব থানায় রোববার (৩ আগস্ট) থেকে চালু হচ্ছে সব ধরনের অনলাইন

৫ আগস্ট সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র: প্রেস উইং

আগামী ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে বলে

আ. লীগ অপকর্ম করতে চাইলে কোনোভাবেই ছাড় পাবে না

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম যেহেতু নিষিদ্ধ, সেহেতু তারা কোনো অপকর্ম করতে চাইহলে কোনভাবেই ছাড় পাবে না

৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থানের অভিযোগে দেশটি থেকে ফেরত পাঠানো আরও ৩৯ জন বাংলাদেশে পৌঁছেছেন। শনিবার (২
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

লোহাগাড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির নতুন দায়িত্বে মেহেদী-জাহেদুল

কক্সবাজারে ট্রেন দুর্ঘটনার পর রেললাইন আটকে বিক্ষোভ

ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক বইমেলায় হবে প্রবাসী লেখকদের মিলন মেলা

লন্ডনে গ্রেটার কামাল বাজার ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট ইউকের নতুন কমিটি গঠন

রোববার থেকে জিএমপির সব থানায় অনলাইন জিডি চালু হচ্ছে

পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যায় আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার

রাস্তার কাজে অনিয়মের জেরে এলজিইডির কর্মচারীকে গণপিটুনি

এশিয়া কাপ দেখতে না পাওয়ার সম্ভাবনা পাকিস্তানের অধিবাসীদের

বেসরকারি লিগে ‘পাকিস্তান’ নাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি

চলতি বছরে ওমরাহ সিজনে ৪৫ দিনে ওমরাহ করলেন ১২ লাখ মানুষ

দেশের স্বার্থ বিসর্জনের কোনো সুযোগ নেই: বাণিজ্য উপদেষ্টা

স্থলপথে হজযাত্রা বন্ধ করতে যাচ্ছে মিসর

খুবিতে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন দেশি-বিদেশি তিন শতাধিক গবেষক

কক্সবাজারের রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেল চারজনের

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতি পোশাক শিল্পের জন্য ইতিবাচক: ফজলে শামীম এহসান

জুলাইয়ের মায়েরা স্মরণসভায় কান্নায় ভেঙে পড়েন শহীদের মায়েরা

র‍্যাব পরিচয়ে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত দলের আট সদস্য গ্রেপ্তার

বিএনপির পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, গ্রেফতার ৫

রাত দশটার পর হলের বাইরে থাকলে চবিতে ছাত্রীদের সিট বাতিল

সাশ্রয়ী মূল্যে চট্টগ্রাম-মোংলা বন্দরের সেবা নিশ্চিত করতে হবে