বাজারে ইলিশের চড়া দাম এবং তা কমানোর বিষয়ে সুখবর দিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তবে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরিদা আখতার। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫’ এবং সারা দেশে ইলিশের প্রাপ্যতা, মূল্য ও সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
উপদেষ্টা জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি কেজি ইলিশের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করেছে ১২.৫০ ডলার। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ অনুযায়ী ডলারের ক্রয়মূল্য ছিল ১২১.৭২ টাকা। এই হিসাবে ৬১ হাজার ৪৩৮ কেজি ইলিশের বাজারমূল্য দাঁড়াচ্ছে ১৯ কোটি ৩৯ লাখ ৭ হাজার ১১৭ টাকা। অন্যদিকে, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ১৮ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ২২.২৬ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বাজারমূল্য বেশি হলেও রপ্তানিমূল্যের তুলনায় কম থাকায় রপ্তানিকারকরা যথাযথ লাভ করতে পারছেন না।
ফরিদা আখতার বলেন, শনিবার পর্যন্ত দাম তেমন কমেনি। আমরা ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহসহ সব জায়গার খবর নিয়েছি। শুধু ঢাকার কথা বলি—৪০০ থেকে ৬০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকায়। ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রামের দাম ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা এবং ৯০০ গ্রামের ওপরে প্রতি কেজি ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে আমি খুব সুখবর দিতে পারছি না। এজন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি আগেও বলেছি, বাংলাদেশের মানুষ যেন সাশ্রয়ী দামে ইলিশ খেতে পারে, সে জন্য আমরা গবেষণা চালাচ্ছি। আসল সমস্যাটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। ইলিশের প্রাপ্তিটা শুধুমাত্র যে অভিযান চালিয়ে মা ইলিশ রক্ষা করলে হচ্ছে না, আমরা দেখছি আরও অনেক কারণ আছে। আশা করছি, এ বছর না পারলেও আগামীতে ভালো অবস্থায় আসতে পারব।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যর্থতা বলতে চাইলে বলতে পারেন। বাজারে ইলিশের দাম না কমা আমারও কষ্টের কারণ। আমি কোনো রকম আত্মপক্ষ সমর্থন করব না। তবে আমরা মূল কারণটা জানার চেষ্টা করেছি। আমরা আড়তদারদের অনুরোধ করেছি মুনাফা কিছুটা কমাতে। সিটি করপোরেশনকে বলেছি যেন তারা টোল না নেয়। তারপরও প্রাপ্যতার বিষয়টি বড় একটি কারণ। কিছু জায়গায় মজুতের অভিযোগ আছে কিনা, তা আমরা খতিয়ে দেখব। তবে এই মুহূর্তে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।
আমার বার্তা/এমই