ই-পেপার রবিবার, ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

গত শতাব্দীর পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে

মো. কামরুল ইসলাম:
৩০ জুলাই ২০২৫, ১৮:৪০

সঠিক নেতৃত্ব তৈরীর কারিগর ছিলো দেশের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ। ডাকসু, চাকসু, রাকসু, জাকসু, শাকসু, বাকসু নির্বাচন গুলোর কথা নিশ্চয়ই মনে আছে আপনাদের। এমনকি ঢাকা কলেজ, রাজশাহী কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ, বরিশাল বিএম কলেজ, কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজ, চট্টগ্রামের মহসিন কলেজ, সিলেটের এমসি কলেজ, রংপুরের কারমাইকেল কলেজ, খুলনার বিএল কলেজ, যশোরের এমএম কলেজসহ সারা দেশের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচিত করার জন্য, ছাত্র নেতৃত্ব তৈরী করার জন্য সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উঠে আসা অনেক ছাত্র নেতা পরবর্তীতে জাতীয় রাজনীতির হাল ধরেছে।

গত শতাব্দীর শেষ সময়গুলোর পদধ্বনি আবারো শুনতে পাচ্ছি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর, যা জুলাই আন্দোলনের ফলে প্রাপ্ত পরিবর্তনের ফল। ইতিমধ্যে ডাকসু, রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্র সংসদ নির্বাচন একটা রিহার্সল বলতে পারেন। গত শতাব্দীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সহযোগী সংগঠন হিসাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইসলামী ছাত্রশিবির, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র ফেডারেশন সহ বেশ কিছু ছাত্র সংগঠন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কেন্দ্রিয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করতো। যা প্যানেল আকারে একক সংগঠন থেকে কিংবা বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন নির্বাচনকালীন ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে প্যানেল দিয়ে নির্বাচন করতো, যা প্রতিটি ক্যাম্পাসে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করতো। একটা ঈদ ঈদ ভাব থাকতো। প্রতি বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতো।

একসময় ছাত্র সংসদ নির্বাচন দ্বারাও সরকার পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যেত। আশি-নব্বই দশকের ধারাবহিক ছাত্র সংসদ নির্বাচনেরর শেষ অংক ছিলো সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন, যা শাকসু নামেই পরিচিত ছিলো। ১৯৯৭ সালে শাকসু’র শেষ নির্বাচন হয়। দীর্ঘ সময় পর এসিড টেস্ট হিসেবে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় ২০১৯ সালে। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নির্বাচনে পরাজয়ের পর পরবর্তীতে আর ডাকসু সহ অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনের পথে পা বাড়ায়নি ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ।

সারা দেশের নির্বাচন কেন্দ্রিক অবকাঠামো জাতীয় নির্বাচন সহ সব নির্বাচন যেভাবে বছরের পর বছর ধ্বংসযজ্ঞে পরিনত করা হয়েছে ঠিক একইভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কেন্দ্রিয় ও হল সংসদ নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। জুলাই আন্দোলনের পর ৫ আগষ্ট পরবর্তীতে সব কিছুতেই একটা পরিবর্তনের আবাস মিলছে, যা আগামীর বাংলাদেশ গঠনে সহায়তা করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্র নেতৃত্ব তৈরীর কারিগর হিসেবে খ্যাত কেন্দ্রিয় ও হল সংসদ নির্বাচন। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সারা বছর পাঠ্যক্রম বহির্ভূত নানা বিষয়ে সাধারন ছাত্রছাত্রীদের ব্যস্ত সময় পার করতে সহায়তা করতো।

ছাত্র সংসদ নির্বাচন না থাকায় ছাত্রদের মাঝে মাদকাসক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, অনৈতিক কাজের বিশেষ করে চাদাবাজ, টেন্ডারবাজদের আবির্ভাব ঘটে। জুলাই আন্দোলনের পরপূর্ণ ফসল আমরা ঘরে তুলতে পারি নাই শুধু মাত্র রাজনৈতিক সহনশীলতা না থাকায়। জুলাই আন্দোলনের ফলে জাতীয় রাজনীতিতে তরুন নেতৃত্বের আবির্ভাব দেখতে পেয়েছি। জুলাই স্পিরিটকে ধারন করে গত এক বছরে ডজন খানেক রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব ঘটেছে। দেশের ভবিষ্যত রাজনীতির হালচাল তাদের উপরও নির্ভর করবে।

জুলাই আন্দোলনকে স্বীকৃতি দিতে যেয়ে যেন কোনো ভাবেই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন কিংবা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। ভাষা আন্দোলন আমাদের মায়ের ভাষাকে রক্ষা করেছে, আর একাত্তর পাকিস্তানী হানাদের কাছ থেকে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এ দেশের কৃতি সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দিয়েছে। বিশ্ব মানচিত্রে স্থান করে দিয়েছে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র।

চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে বিশ্বের বুকে ছাত্র জনতার বৈপ্লবিক আন্দালনে যে একটি স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার পতন ঘটানো সম্ভব তা সারা বিশ্বের রাষ্ট্র নায়কদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। দৃঢ়চেতা মনোবল বন্দুকের নলের মুখে দাড়িয়ে আবু সাঈদ, মুগ্ধদের মতো হাজারো ছাত্র-জনতার আত্নত্যাগ ভবিষ্যত বাংলাদেশে স্বৈরাচার তৈরীর পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। স্যালুট জুলাই আন্দোলনের সৈনিকদের। ক্ষমতালিপ্সুদের জন্য এক কঠিনতম রেড সিগন্যাল। বাংলাদেশীরা যে বীরের জাতি, সাহসী জাতি তা বারবার প্রমান করেছে। মাঝে ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও ডাঃ মিলনের মতো অনেক ছাত্র জনতা প্রাণ দিয়ে দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছে।

দেশের সকল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন এর সংস্কৃতি গড়ে উঠুক, সঠিক নেতৃত্বের উন্মেষ ঘটুক, বিশ্বের দরবারে একটি যোগ্য জাতি হিসেবে আত্নপ্রকাশ করুক এবং আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা ভবিষ্যত বাংলাদেশের রূপকার হউক এ প্রত্যাশা করি।

লেখক : সাবেক জিএস, শাকসু।

আমার বার্তা/মো. কামরুল ইসলাম/এমই

ক্ষমতার পালাবদল হলেও চাঁদাবাজির সংস্কৃতি অপরিবর্তিত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ক্ষমতার পালাবদল বহুবার হয়েছে। এক সরকার গিয়েছে, আরেক সরকার এসেছে। ক্ষমতার এই

রোহিঙ্গা নেতৃত্ব বিকাশ ও অধিকার আদায়ের সংগ্রাম

রোহিঙ্গা সংকটের শুরু মিয়ানমারে এবং মিয়ানমারেই রয়েছে এই সংকটের সমাধান। প্রায় আট বছর ধরে বাংলাদেশে

এপিআই ও এক্সিপিয়েন্ট উৎপাদনে বাংলাদেশের আত্মনির্ভরশীলতা

ঔষধশিল্পে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা এক বিস্ময়কর উন্নয়নের গল্পকথা, যা নিয়ে বাঙালী হিসেবে আমরা সকলে গর্ববোধ করি।

পর্যটনই হতে পারে জাতীয় আয়ের বিশাল খাত

বাংলাদেশের অর্থনীতির বিশাল সম্ভাবনাময় খাত উঠে আসতে পারে পর্যটন শিল্প। অর্থনীতির প্রধান খাত হিসেবে গড়ে
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাজায় লাগাতার ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৬২ ফিলিস্তিনি

০৩ আগস্ট ঘটে যাওয়া নানান ঘটনা

হাসিনার দুঃশাসনে ১৫ বছর নীরব ছিল উপদেষ্টারা: মেজর হাফিজ

‘নদী ও পানির অধিকারের সংগ্রাম বেগবান করুন’

বিএডিসি ক্ষুদ্র সেচ কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের প্রায় ৯৩% কৃষকদের সাবলম্বী করছে

জুলাই সনদের ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচন হতে হবে: নাহিদ

জামায়াতের আমির এর রোগমুক্তি কামনায় কুমারখালীতে দোয়া মাহফিল

আশুলিয়ায় ছাত্র হত্যা মামলার আসামিসহ গ্রেফতার ৯

সাতক্ষীরার তালায় স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম, অভিযুক্ত স্বামী আটক

অধূমপায়ী ফোরাম (অফ) সুপার সিক্স এর ক্যাম্পেইন সম্পন্ন 

বিজয়নগরে নির্বাচনী সীমানা পরিবর্তনের প্রতিবাদে গণস্বাক্ষর, ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী

লোহাগাড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির নতুন দায়িত্বে মেহেদী-জাহেদুল

কক্সবাজারে ট্রেন দুর্ঘটনার পর রেললাইন আটকে বিক্ষোভ

ফ্রান্সের আন্তর্জাতিক বইমেলায় হবে প্রবাসী লেখকদের মিলন মেলা

লন্ডনে গ্রেটার কামাল বাজার ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট ইউকের নতুন কমিটি গঠন

রোববার থেকে জিএমপির সব থানায় অনলাইন জিডি চালু হচ্ছে

পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যায় আরও দুই আসামি গ্রেপ্তার

রাস্তার কাজে অনিয়মের জেরে এলজিইডির কর্মচারীকে গণপিটুনি

এশিয়া কাপ দেখতে না পাওয়ার সম্ভাবনা পাকিস্তানের অধিবাসীদের

বেসরকারি লিগে ‘পাকিস্তান’ নাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি