মানুষের ভালো কাজ তাকে পরকালে আল্লাহর শাস্তি থেকে মুক্তি দেয় এবং মন্দ কাজ আল্লাহর শাস্তির মুখোমুখি করে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘আমিই তো মৃতকে জীবিত করি, আর লিখে রাখি যা তারা অগ্রে (পরকালের জন্য) প্রেরণ করে এবং যা পেছনে (দুনিয়ায়) রেখে যায়। আর প্রতিটি বস্তুকেই আমি সুস্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষণ করে রেখেছি।’ (সুরা ইয়াসিন, আয়াত : ১২)
হজরত উসমান (রা.) কোন কবরের পাশে দাড়িয়ে এতো কাঁদতেন যে, তার দাঁড়ি ভিজে যেতো। তাকে প্রশ্ন করা হলো, জান্নাত জাহান্নামের আলোচনা করা হলে তো আপনি এতো কাঁদেন না, অথচ এই কবর দেখে এতো বেশি কাঁদেন কেন? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—
আখিরাতের ঘাঁটিসমূহের (প্রাসাদ) মধ্যে কবর হলো প্রথম ঘাঁটি। এখান থেকে কেউ মুক্তি পেয়ে গেলে তবে তার জন্য পরবর্তী ঘাঁটিগুলোতে মুক্তি পাওয়া খুব সহজ হয়ে যাবে। আর সে এখান হতে মুক্তি না পেলে তবে তার জন্য পরবর্তী ঘাঁটিগুলো আরো বেশি কঠিন হবে।
তিনি (উসমান) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, আমি কবরের দৃশ্যের চাইতে অধিক ভয়ংকর দৃশ্য আর কখনো দেখিনি। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৬৭)
আরেক হাদিসে হজরত বারা ইবনে আজীব থেকে বর্ণিত হয়েছে, ঈমানদারদের জন্য কবরকে প্রশস্ত করে দেওয়া হবে। যতদূর পর্যন্ত দৃষ্টি যায় ততদূর পর্যন্ত তাদের কবর প্রশস্ত করে দেওয়া হবে।
কবরে ঈমানদারের কাছে একজন সৌম্যকন্তি সুন্দর পোশাক পরিহিত যুবক আসবে। বলবে, সাধুবাদ গ্রহণ করো। উৎফুল্ল হও। আজ সেই শুভ দিন, যেদিনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তোমাকে। কবরবাসী বলবে, তুমি তো দেখছি খুবই সুদর্শন। নিশ্চয় তোমার আগমন ঘটেছে কল্যাণ সহকারে।সে বলবে, আমি তোমার সৎকর্ম।
আর অবিশ্বাসীদের কবর হবে অতিসংকীর্ণ। মাটি তাকে এমনভাবে চাপ দেবে যে, ওই চাপের ফলে তার এক পাঁজরের অস্থিগুলো অন্য পাঁজরের মধ্যে ঢুকে যাবে। তার কাছে আসবে এক কুৎসিৎ, দুর্গন্ধময় ও বিশ্রি পোশাক পরা ব্যক্তি। বলবে, তোমাকে এমন খবর দিবো যা তোমার মনঃপুত নয়। এই দিন সম্পর্কেই তোমাকে যথাসময়ে সতর্ক করা হয়েছিল। কবরবাসী বলবে, তুমি কে? তুমি তো দেখছি অশুভবার্তাবাহী ও অতি কুশ্রী। সে বলবে, আমি তোমারই অশুভকর্ম। (মুসনাদে আহমাদ)
আমার বার্তা/জেএইচ